Quran Charcha Kendra

কুরআন মানবজাতির জন্য হিদায়াত, হিদায়াতের নিদর্শন এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু তায়া’লা পক্ষ থেকে অবতীর্ণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৯০.৪% মুসলিম। এ বিশাল মুসলিম জনগোষ্ঠীর কুরআনের প্রতি আবেগ-অনুভূতির কমতি নেই, কিন্তু সমাজের সর্বস্তরে জুলুম – অত্যাচার, দুর্নীতি, অশ্লীলতা, মাদকদ্রব্যের বিস্তার ইত্যাদি সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। যে সমাজে কুরআনের শিক্ষা বিদ্যমান, সে সমাজে শান্তি, সুশৃঙ্খলা এবং সমৃদ্ধি অনিবার্য। মানুষ তো এখনো কুরআন পড়ে, তবে কেন আমরা এতো অশান্তি, বিশৃঙ্খলা দেখতে পাচ্ছি? তাহলে সমস্যা কোথায়? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেতে কুরআন চর্চা কেন্দ্র গনমানুষের মাঝে কুরআন চর্চার চালচিত্র জানতে একটি জরিপ পরিচালনা করে।

বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ থেকে ১০০ জনেরও বেশী স্বেচ্ছাসেবক নির্বাচন করে তাদেরকে জরিপ পরিচালনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছিল। উক্ত স্বেচ্ছাসেবকগণ তাদের নিজ এলাকায় Random Sampling-এর ভিত্তিতে নির্দিষ্ট সংখ্যক উত্তরদাতা/লোক থেকে সরাসরি response / উত্তর সংগ্রহ করেন। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার আনুপাতিক হার বিবেচনা করে প্রত্যেকটি বিভাগ থেকে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক Response / উত্তর সংগ্রহ করা হয়েছে। জরিপে মোট ৬,২৪৭ জন অংশগ্রহণ করেছেন।

জরিপের গুরুত্বপূর্ণ ফলাফলঃ

১। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৩১% কুরআন পড়তে পারেন না।

২। পুরুষদের তুলনায় নারীদের কুরআন পড়ার সক্ষমতার হার বেশি।

৩। যারা কুরআন পড়তে পারেন তাদের ৩৮% কুরআন পড়েন না বললেই চলে।

৪। নিয়মিত কুরআন না পড়ার প্রধান দু’টি কারণ: ক) পড়তে না জানা, খ) সময় না পাওয়া

৫। ৭৫% অংশগ্রহণকারী অর্থসহ কুরআন পড়েন না।

৬। বাংলাদেশে কুরআন চর্চা কম হওয়ার প্রধান দু’টি কারণ: পাঠ্যপুস্তকে গুরুত্বের সাথে অন্তর্ভুক্ত না থাকা, কুরআনের ভষাজ্ঞান (পড়তে জানা) না থাকা।

৭। প্রায় শতভাগ অংশগ্রহণকারী মনে করেন, সকল কুরআন অধ্যয়ন বাধ্যতামূলক করা উচিত। প্রায় মতভাগ অংশগ্রহণকারী মনে করেন, বাস্তব জীবনে কুরআনের প্রায়োগিকতা রয়েছে।

সুপারিশঃ

১। মূলধারার শিক্ষাক্রমে কুরআন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত।

২। শিক্ষাক্রমের নানা স্তরে পর্যায়ক্রমিক পাঠ-বণ্টনের মাধ্যমে কুরআন পড়া, অর্থসহ কুরআন পড়া ও কুরআনীয় আরবি শেখার মত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা।

৩। শিক্ষাক্রমে কুরআন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার জন্য জনমত গঠন করা।

৪। আদর্শ নাগরিক তৈরী ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ার ক্ষেত্রে কুরআনি শিক্ষার ভূমিকা নীতি-নির্ধারকদের সামনে তুলে ধরাশিশুদের কুরআন শিক্ষার জন্য মক্তব বা সকালের পাঠশালার পুনরুজ্জীবন অপরিহার্য।

৫। বেসরকারি পর্যায়ে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে কুরআন শিক্ষার প্রসারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

৬। জরিপে ওঠে এসেছে যে, ‘সময়াভাবে অনেকে কুরআন অধ্যয়ন করতে পারেন না।’ এমন মনোভাবকে বৈষয়িকতার চরম পরাকাষ্ঠা বলে বিবেচনা করা যায়। দুনিয়া ও আখিরাতের প্রতি যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করে ভারসাম্যপূর্ণ জীবন গঠনে মুসলিমদের উদ্বুদ্ধ করা। এ ব্যাপারে ইমাম, খতিব, আলিম ও ওয়ায়েজদের এগিয়ে আসা উচিত।

জরিপের বিস্তারিত ফলাফল প্রথম কমেন্টের লিংকে পাবেন। দয়া করে প্রাসঙ্গিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে জরিপের ফলাফল ও সুপারিশ শেয়ার করুন। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু তায়ালা আমাদের উত্তম কাজগুলো কবুল করুন এবং দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ দান করুন।

নিবেদক,

সমন্বয়ক

কুরআন চর্চা কেন্দ্র

Email: qurancharchakendra@gmail.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *